সোনারপুর হাসিমুখ: অসহায় মানুষের পাশে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা

সোনারপুর হাসিমুখ নামটি শুনলেই মনে পড়ে অভুক্ত, আসহায় ভবঘুরে ও শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর কথা। এই সংস্থাটি ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি করোনা মহামারির সময় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সময় বহু মানুষ কাজ হারিয়েছিল, সবাই বাইরে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল প্রানের ভয়ে। চারিদিকে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। ঠিক তখনই সোনারপুর হাসিমুখের জন্ম।


সংস্থাটি শুরু হয়েছিল সোনারপুর স্টেশনে রাত্রিবেলায় অসহায় মানুষের জন্য খিচুড়ি বিতরণ করে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত প্রতি দিন রাতের শীত,গ্রীষ্ম, বর্ষা খাবার বিতরণ করে চলেছে সকলের সহযোগিতা। এছাড়াও তারা ছোট ছোট শিশুদের পূজার জামাকাপড় বিতরণ এর পাশাপাশি তারা অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, মানসিক ভারসাম্যহিন মানুষের খাবার খাওয়ানো, পথশিশুদের শিক্ষাদান ইত্যাদি কাজ করেন।


সোনারপুর হাসিমুখের পথ চলা এখনও দীর্ঘ নয়, কিন্তু সংস্থাটি ইতিমধ্যেই অসহায় মানুষের জন্য অনেক কিছু করেছে। সংস্থাটির সদস্যরা সবাই সবাইকে ভাই বলে সম্বোধন করে। তারা নিজেদের অর্থ দিয়ে এবং অন্যদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে এই কাজ করে থাকে।


সোনারপুর হাসিমুখের লক্ষ্য হল অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের জীবনকে একটু হলেও সুন্দর করা। সংস্থাটি তাদের এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।


কখনো কোনদিন ভেবেছেন, রাস্তায় যে মানসিক ভারসাম্যহিন মানুষটিকে দেখছেন তাকে নিজের হাতে তুলে ভাত খাওয়ানোর কথা। কী হলো ভাবতেই মনটা কেমন করছে তাইনা? কিন্তু হাসিমুখের এক ভাই নিজের হাতে খাবার তুলে দিয়েছে। (তার কাছে শুনেছিলাম সেই অনুভুতি)। 


যখন আজকাল সবই নিজেদের কে নিয়ে ব্যাস্ত, সেখানে হাসিমুখ ও হাসিমুখের সকল সদস্য অসহায় মানুষদের পাশে সবসময় আছে, আর আপনাদের আশীর্বাদে হাসিমুখের পথ চলা ৪বছর অতিক্রম হতে চলেছে। আপনরা আশীর্বাদ করুন এই ৪বছর যেনো ৪০০বছর করতে পারে।

সোনারপুর হাসিমুখের সদস্যরা তাদের কাজের জন্য অনেক সম্মান অর্জন করেছেন। তারা বিশ্বাস করে যে ভালো কাজের জন্য কোনো পুরস্কারই যথেষ্ট নয়। তারা শুধুমাত্র মানুষের ভালোর জন্য কাজ করতে চায়।


সংস্থার এক সদস্য বলেন, "আমরা সবাই সবাইকে ভাই বলে ডাকি। আমরা মনে করি, ভালো কাজ করতে লোকের অভাব হয় না। তাই আমরা সবসময় অসহায় মানুষের পাশে থাকবো। আমরা কোনদিন ভাবতেই পারি নি যে আমরা এত সন্মান পাবো। আপনারা আমাদের পাশে না থাকলে সম্ভব হতো না। আপনাদের মত মানব দরদি ও সহিদ্রয় ব্যক্তি যতদিন এইধরনের সমাজ সেবা মূলক কাজে এগিয়ে আসবেন, আমদের বিশ্বাস কোনো অসহায় মানুষ অভুক্ত থাকবে না। কোনো শিশু পথে ভিক্ষা করবে না। না কাউকে বিনা চিকিৎসায় প্রাণ ত্যাগ করতে হবে। কথায় বলে না, মানুষ মানুষের জন্য। আমাদের সবার মনেই কিছু দয়া মায়া আছে, থাকবে নাই বা কেন বলুন?  আমরা যে মানুষ।"


আপনি যদি সোনারপুর হাসিমুখের কাজের সাথে যুক্ত হতে চান তাহলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। সংস্থাটির ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/sonarpurhashimukh/


সোনারপুর হাসিমুখের মতো আরও অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আমাদের সমাজে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কাজ আমাদের সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সকলেই এই সংস্থাগুলোকে সাহায্য করতে পারি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ