সময় ভ্রমণকারীর ডায়েরি : হারিয়ে যাওয়া কলকাতার গল্প

 একটা শহরের সব থেকে বড় রহস্য কী? তার গলিঘুঁজির ভেতর লুকিয়ে থাকা গল্পগুলো। আমরা প্রতিদিন সেই শহরে হাঁটি, যাতায়াত করি, কিন্তু অনেক সময় টেরই পাই না — কত ইতিহাস, কত অজানা রহস্য ঘুমিয়ে আছে আমাদের চোখের সামনেই।

আমি, অভ্র, পেশায় এক সাধারণ সাংবাদিক। কিন্তু ঘটনাটা ঘটেছিল ২০২৪ সালের শীতে। সেই রাতে আমি শোভাবাজার রাজবাড়ির ভেতরে এক পুরোনো ঘর খুঁজতে গিয়ে হঠাৎ দেখতে পেলাম—একটা অদ্ভুত ঘড়ি। ঘড়িটার কাঁটা চলছিল উল্টো দিকে! কৌতূহল সামলাতে পারিনি, ছুঁয়ে ফেললাম। আর তারপরই সব অন্ধকার হয়ে গেল।

চোখ খুলে দেখি আমি দাঁড়িয়ে আছি ১৮৫৬ সালের কলকাতায়! হাওড়ার ব্রিজ তখনও হয়নি, গঙ্গার ঘাটে পালতোলা নৌকা ভেসে বেড়াচ্ছে। ঘোড়ার গাড়ি ছুটছে চিৎকার করতে করতে। আশ্চর্যের ব্যাপার—কেউ আমাকে অচেনা মনে করছে না। যেন আমি ওই যুগেরই মানুষ।

আমি হেঁটে চললাম চৌরঙ্গি পর্যন্ত। রাস্তার ধারে একটা বইয়ের দোকানে দেখলাম বঙ্কিমচন্দ্র বসে আছেন, হাতে খাতা। সাহস করে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনি কী লিখছেন?”
তিনি মৃদু হেসে বললেন—“আনন্দমঠ।”

আমি শিহরিত হয়ে উঠলাম। যে বই একদিন ভারতকে স্বাধীনতার গান উপহার দেবে, সেটার জন্ম আমি নিজ চোখে দেখছি!

তারপর হঠাৎ কোথা থেকে এক বুড়ো সাধু এসে আমাকে বললেন,
“তুমি ভবিষ্যৎ থেকে এসেছ, জানি। কিন্তু সাবধান—অতীত বদলালে ভবিষ্যৎও বদলে যাবে।”

আমি ঘাবড়ে গেলাম। সাধুটি অদৃশ্য হওয়ার আগে একটা কথা রেখে গেলেন—
“এই শহরের প্রতিটি ইট, প্রতিটি অলিতে-গলিতে একেকটা গল্প ঘুমিয়ে আছে। তোমার দায়িত্ব সেগুলো খুঁজে বের করা, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানতে পারে।”

তারপরই আবার চোখ ঝাপসা হয়ে গেল, আর আমি ফিরে এলাম বর্তমানের শোভাবাজার রাজবাড়ির সেই ঘরে। ঘড়িটা নেই। শুধু টেবিলে রাখা একটা ডায়েরি, যাতে লেখা—
“সময় ভ্রমণকারীর ডায়েরি, প্রথম খণ্ড”


আজও ভাবি—ওটা কি আমার কল্পনা ছিল, নাকি সত্যিই আমি সময় ভ্রমণ করেছিলাম? যাই হোক, সেই রাত থেকে আমি একটাই কাজ শুরু করেছি—কলকাতার অলিতে গলিতে হারিয়ে যাওয়া গল্প খুঁজে বের করা।


✨ এই ব্লগে আমি সিরিজ আকারে লিখব “সময় ভ্রমণকারীর ডায়েরি”—যেখানে একে একে উঠে আসবে সেইসব অজানা গল্প, যেগুলো হয়তো কোনোদিন তোমরা শোনোনি।

👉 তুমি যদি কলকাতার লুকিয়ে থাকা রহস্য জানতে চাও, এই সিরিজ ফলো করতেই হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ