সময় ভ্রমণকারীর ডায়েরি : ষষ্ঠ অধ্যায় — কালীঘাট মন্দিরের অদৃশ্য সাধু

 

রহস্যময় রাত

সেদিন রাত প্রায় বারোটা। কালীঘাট মন্দির প্রায় ফাঁকা। চারিদিকে শুধু জোনাকি আর শেয়ালের ডাক। আমি মন্দিরের আঙিনায় দাঁড়িয়ে ছিলাম, হঠাৎ এক অদ্ভুত শীতলতা ভর করল চারপাশে।

ঘণ্টা বাজতে শুরু করল, অথচ মন্দিরে কেউ নেই। মাটিতে ছায়া পড়ল, আর সেই ছায়ার ভেতর থেকে বেরিয়ে এলেন এক অদ্ভুত সাধু।

গায়ে শুধু ছেঁড়া কাপড়, গলায় খুলি-মালা, আর চোখ জ্বলজ্বল করছে লাল আগুনের মতো।

তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন—
“তুমি ভবিষ্যৎ থেকে এসেছ। আমি জানি। কিন্তু আজকের রাত তোমার জন্য সহজ নয়।”

রক্তমাখা প্রতিজ্ঞা

সাধুটি মাটিতে সাদা গুঁড়া দিয়ে এক বৃত্ত আঁকলেন। তারপর একটা ছোট পাত্র থেকে লাল তরল ঢালতে লাগলেন। গন্ধে বুঝলাম, সেটা রক্ত।

তিনি মন্ত্রপাঠ করতে করতে বললেন—
“এই শহরের ভাগ্য কালীমায়ের হাতে বাঁধা। এখানে যতবার রক্ত ঝরবে, শহর তত নতুন করে জন্ম নেবে। আমি আজ যে প্রতিজ্ঞা করছি, সেটা ভবিষ্যতের কলকাতার জন্য।”

আমি কেঁপে উঠলাম।

সময়ের দ্বার উন্মোচন

হঠাৎ মাটির বৃত্ত থেকে আগুনের শিখা উঠল। আমি দেখলাম—আগুনের ভেতর ভেসে উঠছে কলকাতার ভবিষ্যতের ছবি।

  • একদিকে বিপুল ধ্বংস—বন্যা, অগ্নিকাণ্ড, ভাঙাচোরা ঘর।

  • অন্যদিকে অতুলনীয় সমৃদ্ধি—আকাশচুম্বী অট্টালিকা, উজ্জ্বল আলোয় ভরা শহর।

সাধু বললেন—
“কলকাতার ভাগ্য নির্ধারণ করবে এখানকার মানুষ। যদি তারা ঐক্যবদ্ধ হয়, শহর সমৃদ্ধ হবে। যদি লোভী হয়, তবে ধ্বংস অবধারিত।”

হঠাৎ আঘাত

আমি সেই আগুনের ভেতরে তাকিয়ে ছিলাম, হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ হলো। মনে হলো, কেউ যেন আমাকে বৃত্তের ভেতরে টেনে নিতে চাইছে। আমি প্রাণপণে বেরিয়ে আসতে চাইছিলাম।

সাধুর কণ্ঠ আবার বাজল—
“এই কথা মনে রেখো, ভ্রমণকারী—কলকাতার মাটি শুধু ইট-পাথরের নয়। এটা রক্ত আর প্রতিজ্ঞায় বাঁধা। ভবিষ্যতে তুমি যখন সত্য খুঁজবে, এই রাত তোমার পথ দেখাবে।”

তারপরই সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেল।

ডায়েরির ষষ্ঠ খণ্ড

বর্তমানে ফিরে এসে দেখি, টেবিলে ডায়েরির নতুন লাইন—
“সময় ভ্রমণকারীর ডায়েরি, ষষ্ঠ খণ্ড — কালীঘাটের অদৃশ্য সাধু”


💡 পাঠকের জন্য প্রশ্ন:
👉 তুমি কি বিশ্বাস করো, সত্যিই কোনো রহস্যময় সাধুর প্রতিজ্ঞা আজও কলকাতার ভাগ্য নির্ধারণ করছে?
👉 নাকি সবটাই কল্পনার খেলা?


📌 পরের অধ্যায় : “ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের গোপন কক্ষ” — যেখানে আমি সময় ভ্রমণ করে আবিষ্কার করি এক লুকোনো কক্ষ, যার ভেতরে রয়েছে এমন নথি, যা হয়তো ভারতের ইতিহাসটাই বদলে দিতে পারত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ