মৃত্যু

(ছবি সৌজন্যে ইন্টারনেট)

সুব্রত এক গরীব চাষী, স্ত্রী উমা ও আট মাসের ছোট্ট ছেলে বাবুকে নিয়ে তার সংসার। বৈশাখ মাসের দুপুর বেলায় খেয়ে দেয়ে প্রতিদিন বারান্দায়, দক্ষিণের হাওয়ায় ভাত ঘুম দেয়। ঘরের সামনে উঠান তার পর পুকুর। পুকুরে অনেক বড় বড় মাছ আছে। কিন্তু কচুরিপানার জন্য পুকুরের মাছ ধরতে পারে না।
বাবুসোনা অঘোরে ঘুমাচ্ছে ও তার বাবা পাশাপাশি বিছানায় ঘুমাছে দেখে উমা ভাবলো,এই ফাঁকে মাঠ থেকে একটু ঘুটে কুড়িয়ে নিয়ে আসি। মায়েরা যেমন হয় আর কি।একটু আধটু সময় পেলে হাতের কাজ সেরে নিতে চায়। উমা ঝুড়ি নিয়ে মাঠে চলে গেল।
এদিকে সুব্রতর ঘুম ভাঙ্গলো, ছেলে ঘুমাচ্ছে দেখে ভাবলো ওর মা কাছাকাছি আছে কোথাও।আমি এক বার মাঠে গিয়ে লংকা গাছ গুলো দেখে আসি। কিছুক্ষণ বাদে সুব্রত বাড়ি ফিরে আসে এবং দেখে পুকুরে কচুরিপানার মধ্যে কিছু একটা নড়ছে। ভাবলো বড়ো শোল মাছ হবে, কোঁচ নিয়ে এসে ধরি।
যে কথা সেই কাজ, ছুটে গিয়ে কোঁচ নিয়ে এসে, যেখানে কচুরিপানা নড়ছিলো সেখানে বসিয়ে দিল। ফিনকি দিয়ে রক্ত, ভাবলো বিশাল বড় মাছ।
কোঁচ টেনে তুলে দেখে তার সেই ছোট্ট ছেলে তার কোঁচে ঝুলছে।তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছে আর সে নেতিয়ে পড়েছে।
ছেলেকে উঠানে সেই ভাবে ফেলে রেখে সে ঘরে যায়। ঘরে বাগানে দেওয়া বিশ ছিল, সেটা খেয়ে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে ।
এদিকে উমা মাঠ থেকে এসে দেখে, উঠানে কোঁচে গাঁথা রক্ত মাখা তার কোলের ছেলে বাবু। আঁছড়ে পড়লো ছেলের উপর। কোনো সাড়া নেই, যেন একতাল কাদা। তার পর হাপুর দিয়ে দিয়ে বারান্দায় উঠে স্বামীর চাদর সরিয়ে দেখে তার মুখ থেকে গেজা উঠেছে শরীর নীল।
উমা তার পর বুকে হেঁটে হেঁটে ঘরে গিয়ে তার কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়লো।
প্রতিবেশীরা এসে তিন জন কে ঐ ভাবে দেখে এবং তাদের মতন করে গল্পটা বলেছিল।

নীতিকথা
একটু অসতর্কে কত কি ঘটে যায়।
                                  সুলেখা দেবনাথ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ