সময় ভ্রমণকারীর ডায়েরি : পঞ্চম অধ্যায় — মার্কিন কনস্যুলেটের গুপ্তচর আর বাংলার গোপন মিশন

 

যুদ্ধের ছায়ায় ঢাকা কলকাতা

কলকাতা শুধু সংস্কৃতি বা ইতিহাসের শহর নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই শহর ছিল এশিয়ার গুপ্তচরদের এক গোপন আস্তানা। সেদিন রাতে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম পার্ক স্ট্রিটে মার্কিন কনস্যুলেটের সামনে। হঠাৎ চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেল, আর আমি আবার সময় ভ্রমণের ঝাঁপ খেলাম।

চোখ খুলে দেখি—১৯৪৩ সালের কলকাতা। শহর গমগম করছে ব্রিটিশ সেনা, মার্কিন সৈন্য আর জাপানি বোমার আতঙ্কে। আকাশে মাঝে মাঝেই সাইরেন বাজছে।

রহস্যময় গুপ্তচর

কনস্যুলেটের সামনে এক স্যুট-পরা ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছেন। হঠাৎ তিনি আমাকে লক্ষ্য করলেন আর মুচকি হেসে বললেন—
“তুমি এখানে নতুন, তাই না? আমার নাম জর্জ অ্যান্ডারসন। অফিসার, OSS (Office of Strategic Services)। কিন্তু আমি জানি তুমি এখানকার নও।”

আমি হতবাক। তিনি কীভাবে বুঝলেন আমি ভবিষ্যৎ থেকে এসেছি?

তিনি ফিসফিস করে বললেন—
“শোনো, কলকাতা এখন শুধু যুদ্ধক্ষেত্র নয়। এখানে আমেরিকান, ব্রিটিশ, জাপানি, এমনকি সোভিয়েত গুপ্তচরও কাজ করছে। আর এই শহরের প্রতিটি চায়ের দোকানই হতে পারে এক গোপন মিটিং পয়েন্ট।”

গোপন মিশন

আমি তার পিছু নিয়ে ঢুকে পড়লাম এক পুরোনো ট্রাম-ডিপোতে। ভেতরে কয়েকজন ভারতীয় বিপ্লবী বসে আছেন, মানচিত্র হাতে। জর্জ তাদের বলল—
“আমরা চাই ব্রিটিশরা জাপানের বিরুদ্ধে শক্তিশালী থাকুক। আর তোমরা চাইছ ভারত স্বাধীন হোক। তাহলে একসাথে কাজ করলে দু’পক্ষই লাভবান হব।”

আমার মাথায় ঘুরপাক খেল—
👉 তাহলে কি আমেরিকানরা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গোপনে হাত লাগিয়েছিল?
👉 নাকি এ সবই শুধু তাদের যুদ্ধকৌশল ছিল?

গোপন কাগজপত্র

হঠাৎ কনস্যুলেটের ভেতর থেকে এক সিন্দুক বের করা হলো। তার ভেতরে কিছু গোপন নথি—যেখানে লেখা ছিল “Operation Bengal Tiger”। এই মিশনে কলকাতাকে ব্যবহার করা হচ্ছিল গুপ্তচর যুদ্ধে সবচেয়ে বড় ঘাঁটি হিসেবে।

ঠিক তখনই সাইরেন বাজল, বোমার শব্দ কানে এলো, সব কেঁপে উঠল। আর আমি আবারও সময়ের স্রোতে ভেসে গেলাম।

ডায়েরির পঞ্চম খণ্ড

বর্তমানে ফিরে এসে দেখি, টেবিলে ডায়েরির নতুন লাইন—
“সময় ভ্রমণকারীর ডায়েরি, পঞ্চম খণ্ড — গুপ্তচরের শহর কলকাতা”


💡 পাঠকের জন্য প্রশ্ন:
👉 তুমি কি বিশ্বাস করো, সত্যিই কলকাতা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক গুপ্তচরদের কেন্দ্র ছিল?
👉 যদি সত্যি হয়, তবে আজও কি শহরের কোথাও সেই নথি বা প্রমাণ লুকিয়ে আছে?


📌 পরের অধ্যায় : “কালীঘাট মন্দিরের অদৃশ্য সাধু আর রক্তমাখা প্রতিজ্ঞা” — যেখানে আমি সময় ভ্রমণ করে চলে যাই ১৭শ শতকে, আর দেখি এক সাধু মন্দিরে এমন এক আচার করছেন, যা ভবিষ্যতের কলকাতাকে চিরতরে বদলে দিতে চলেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ